আশার আলোতে ৫ ইসলামী ব্যাংক

নতুন নামে আবির্ভূত হচ্ছে ৫ ইসলামী ব্যাংক

পাঁচ ইসলামী ধারার ব্যাংক একীভূতকরণ প্রসঙ্গে

ইসলামী ৫ ব্যাংকের গ্রাহকরা আশা-নিরাশার আলোতে

বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা সুদমুক্ত ও শরিয়াহ্‌ভিত্তিক আর্থিক লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিং খাত বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে, বিশেষ করে ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষদের মধ্যে। 

 

 


 

অনেকটা আর্থিক দুর্বল ৫টি ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা আশা-নিরাশার দোলাচলে শঙ্কিত।

এরই অংশ হিসেবে পাঁচটি শরিয়াহ ব্যাংককে একীভূত (মার্জার) করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে, তেমনি উদ্বেগ ও প্রশ্নও তৈরি করছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভার্ণর . আহসান হোসেন মনসুর ১৫ জুন ২০২৫ তারিখে ঘোষণা করেছেন যে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, সোশ্যাল ইসলামী এবং এক্সিম ব্যাংকএই পাঁচটি দুর্বল আর্থিক অবস্থারইসলামী ব্যাংককে আগামী কয়েক মাসে একত্রিত করে একটি নবনির্মিত শরিয়াহ-সম্মত বৃহৎ ব্যাংক গঠন করা হবে

🏛️ গঠন প্রক্রিয়া কারণ:

1.  লাইসেন্স নতুন ব্যাংক

o   কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নতুন সংস্থার জন্য নতুন লাইসেন্স ইস্যু করবে। প্রয়োজন হলে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় প্রাথমিক পুঁজি যোগান দেওয়া হবে

o   ব্যাংক রিসলিউশন অর্ডিন্যান্স ২০২৫ অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে

2.  সম্পদ একীভূতি ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

o   পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ আমানত স্থানান্তর করা হবে; দায়িত্বহীন বা বিষণ্ণ আর্থিক বিষয়গুলি থাকবে একটি আলাদা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে।

o   নন-পারফর্মিং লোন’ (default) হার ১০%-এর নিচে রাখা হবে যাতে নতুন ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

3.  শাখা কর্মী সংরক্ষণ

o   কোন কর্মী বেকার হবেন নাপদোন্নতি বা ছাঁটাই হবে না

o   তবে কিছু শাখা পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে; শহর ভিত্তিক অতিরিক্ত শাখা হ্রাস গ্রামীণ এলাকায় সেবা সম্প্রসারণ হতে পারে

4.  নীতিনির্ধারণ পরবর্তী পরিকল্পনা

o   নির্বাচনের আগে বা পরেবাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ভর করছেপরবর্তী সরকারের সমর্থন”-এর উপর, তবে নির্বাচন অপেক্ষা না করে কাজ শুরু হবে

o   প্রায় তিন বছর সময় লাগতে পারে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে

🎯 উদ্দেশ্য প্রভাব:

  • ব্যাংক সেক্টরে একীকরণ শক্তিকরণ
    • পাঁচটি ছোট, দুর্বল ব্যাংক অনির্দিষ্ট প্রতিযোগিতার মাঝে ব্যাংকিং সেক্টরে ঝুঁকি তৈরি করেছে; একীভূত ব্যাংক যুক্ত বলয়ে বড় শক্তিশালী হবে
  • দুর্নীতি লোপাট পরিরোধ
    • ব্যাংকদের দুর্বল আর্থিক অবস্থার পেছনে পূর্ব সরকারের বেশিরভাগঋণ জালিয়াতি, অসচ্ছলতা, নিয়ন্ত্রণহীনতাএর প্রবল ভূমিকা আছে; নতুন গঠনের মাধ্যমে এসব পুনর্গঠন করে নিয়ন্ত্রিত করা হবে
  • নন-প্রফর্মিং অ্যাসেটস্ (এনপিএস) সীমিত করা
    • ক্ষতিগ্রস্ত খারাপ সম্পদ আলাদা কম্পানিতে সরিয়ে দিয়ে নতুন ব্যাংকের গতিশীলতা পুনঃপুঁজি নিশ্চিত করা হবে

🧾 সারাংশ:

  • কেন: ছোট, দুর্বল শাখায় হুংকার হচ্ছেতাদের একত্রিত করে বড় স্থিতিশীল প্রতিপাদনের উদ্দেশ্য।
  • কখন:আগামী কয়েক মাসেপ্রক্রিয়া শুরু। নির্বাচন অপেক্ষা নয়ই। সমগ্র রূপান্তর বছরের অধিক সময় নিতে পারে।
  • কীভাবে:
    ) নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স মূলধনী সহায়তা।

) সম্পদ-দায় একীভূত ঝুঁকি হ্রাস।

) কর্মী সংরক্ষণ শাখা পুনরায় সংগঠন।

) Bad asset আলাদা ম্যানেজমেন্টে স্থানান্তর।

  • ফলে:

ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা সেবা প্রসার ঘটে।

দুর্নীতি, লিকুইডিটি সংকট ঝুঁকি প্রণালীর পুনর্গঠন নিশ্চিত হয়।

আরো জানুন: 

বাংলাদেশের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংকফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী এবং এক্সিম ব্যাংকএর মধ্যে প্রথম চারটি দখল করেছিলেন চট্টগ্রামের বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম, এবং এগুলোর বড় অংশের অর্থ ঋণের নামে তুলে নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, এক্সিম ব্যাংক দীর্ঘ ১৭ বছর পরিচালিত হয়েছে নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদার-এর নেতৃত্বে, যিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৪ সালের আগস্ট এই ব্যাংকগুলোর পুরনো পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে। এরপর থেকে এই পাঁচ ব্যাংক নতুন পর্ষদের অধীনে গত প্রায় ১০ মাস ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন